আব্দুল আজিজ ইসলাম, কুড়িগ্রাম | সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ক্রমান্বয়ে হচ্ছে। সাধারণ ভোটারদের দাবির প্রেক্ষিতে অনেকেই নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬, কুড়িগ্রাম-২ আসনে একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী মেজর (অবঃ) মুহাম্মদ আব্দুস সালাম। কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট ও ফুলবাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত মহান জাতীয় সংসদের ২৬, কুড়িগ্রাম-২ আসন। এই আসনে দীর্ঘ সময় ধরে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী হিসেবে মেজর (অবঃ) মুহাম্মদ আব্দুস সালাম কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা।
তার স্ত্রী ঢাকার একটি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন। তার মেয়ে ডাক্তার, স্বপরিবারে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এবং ছেলে থাইল্যান্ডে একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে উঁচু পদে কর্মরত আছেন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ বিমান এবং পারটেক্স গ্রুপে প্রায় ৪০ বছরের চাকরি সম্পন্ন করে ২০১০ সনে অবসর নেন। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি কুড়িগ্রাম জেলার সহস্রাধিক মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। যাদের অধিকাংশ ইতিমধ্যে অবসরে গেলেও শতাধিক কর্মচারী এখনও ঐসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি বিগত ১৭/১৮ বছর ধরে জাতীয় পার্টির একজন কর্মী হিসেবে অহেতুক শ্রম ও অর্থ ব্যয় করেছিলেন। কিন্তু মনোনয়ন মেলেনি। যে যোগ্যতার ভিত্তিতে ঐ পার্টি মনোনয়ন দেয়, সে যোগ্যতা তার নেই এবং ভবিষ্যতেও হবে না বলে তার দাবি।
বারবার প্রতিশ্রুতি পাওয়া সত্ত্বেও শেষ মূহুর্তে তিনি নির্বাচনে বরাবরই মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। সাধারণ মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং ইস্পাত-কঠিন সমর্থন তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই তিনি ঐ পার্টি ছেড়ে দিলেও জনগণের ভালোবাসার বন্ধন এবং মাটির টান তাকে আবারো সাধারণ মানুষের সাথে যুক্ত করে রেখেছে। সেই টানেই মেজর (অবঃ) মুহাম্মদ আব্দুস সালাম শেষবারের মতো এবার দলমত নির্বিশেষে কুড়িগ্রামের সকল অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষের প্রতিনিধি হয়ে মাঠে নেমেছেন, জনগণের সেবা করার জন্য। তার দাবি, মহান আল্লাহ তাকে অনেক কিছু দিয়েছে; সংসার, বাড়ি-গাড়ি, প্রতিষ্ঠিত সন্তান-সন্তুতি- সব; আলহামদুলিল্লাহ! এই বয়সে পারিবারিক সেই সুখ ও সান্নিধ্য ছেড়েছেন শুধু কুড়িগ্রামের অবহেলিত সাধারণ মানুষের জন্য। জনপ্রতিনিধি না হয়েও তিনি চাকরি জীবনের সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা, কর্ম এবং সর্বোপরি সাধারণ মানুষের সাথে বিগত বছরগুলোর উঠাবসা ও সুমধুর সম্পর্কের বিবেচনায় যদি জনগণ ভোট দিয়ে তাকে জয়যুক্ত করেন, তাহলে তিনি আরও বৃহত্তর পরিসরে মানুষের সেবা এবং এলাকার উন্নয়ন করতে পারবেন। অন্যথায়, পূর্বের ন্যায়, ক্ষুদ্র জোনাকির মতো মিটমিট করে আলো ছড়িয়েই যাবেন। কেননা তার হৃদয়ে কুড়িগ্রাম! জাগোবাহে কোনঠে সবায়। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মেজর (অবঃ) মুহাম্মদ আব্দুস সালাম একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরে নির্বাচনী প্রচার যুদ্ধে নেমে পড়েছেন। তার নির্বাচনী প্রুতিশ্রুতি গুলো হচ্ছে- ১। কুড়িগ্রাম শহরকে যানজট মুক্ত করা। আন্তঃনগর বাস কাউন্টারগুলো শহর কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে যাওয়া। ২। কুড়িগ্রাম কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি সংস্কার করে যাত্রীবান্ধব করে গড়ে তোলা। ৩। সকল হাসপাতাল ও ক্লিনিকের পরিচ্ছন্নতা ও চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন করা। ৪। আইন শৃঙ্খলার সুরক্ষা ও মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে সর্বাত্মক ভাবে সহযোগিতা করা।
এব্যাপারে জিরো-টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা। ৫। জেলা প্রশাসকের অফিস ও জজকোর্টের চারপাশের রাস্তার সংস্কার করে গণমানুষের দুর্ভোগ কমানো এবং কুড়িগ্রাম পৌরসভাকে যানজট ও জলাবদ্ধতা মুক্ত করা ৬। কুড়িগ্রাম হয়ে ঢাকা-চিলমারী-ঢাকা প্রতিশ্রুত ভাওয়াইয়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু করা এবং কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ও রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে কুড়িগ্রামের সীটের কোটা বাড়ানো। ৭। রাজারহাট হয়ে কুড়িগ্রাম-তিস্তা, কুড়িগ্রাম নাজিমখান এবং নাজিমখান তিস্তা সড়কে রাজারহাট বাইপাস/ফ্লাইওভার নির্মাণ করে রাজারহাট বাজারকে যানজট মুক্ত করা। ৮। রাজারহাট রেলস্টেশনকে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রী উঠানামার উপযোগী করে গড়ে তোলা। ৯। তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা। ধরলা নদীর ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাঁধ ও স্পার নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া। সার্বক্ষণিক ড্রেজিং এর মাধ্যমে নদীর গতিপথ ও নাব্যতা রক্ষা করা এবং প্রচুর জমি কৃষির অধীনে নিয়ে আসা। ১০। কাঁঠালবাড়ির কাছাকাছি ধরলা নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণ অথবা একটি স্থায়ী ফেরীর ব্যবস্থা করে কুড়িগ্রাম-ফুলবাড়ি যোগাযোগ সহজ করা। ১১। চরভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি কুটিরশিল্প গড়ে তুলে চরবাসীকে স্বাবলম্বী করে তোলা। ১২।
বেকার যুবকদের কর্মক্ষম করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন ট্রেডে স্বল্প ব্যয়ে বা বিনা ব্যয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং উচ্চ মহলে যোগাযোগ করে তাদেরকে দেশে এবং দেশের বাইরে (স্বল্প খরচে) চাকরির সুব্যবস্থা করে দেয়া। ১৩। বেকার জনগোষ্ঠীর জন্য সাইবার ভিলেজসহ উপযুক্ত শিল্প কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং এ ব্যাপারে আগ্রহী শিল্প উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা প্রদান করা। ১৪। শিশু-কিশোর এবং যুবকদের জন্য সারা বছরব্যাপী বিভিন্ন খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্র বৃদ্ধি করা। ১৫। কুড়িগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক মানের স্টেডিয়াম হিসেবে গড়ে তোলা এবং দেশী-বিদেশী খেলোয়াড়দের আবাসনের জন্য কমপক্ষে থ্রি-ষ্টার মানের একটি হোটেল তৈরি করা এবং এব্যাপারে আগ্রহী উদ্যোক্তাকে সহযোগিতা প্রদান করা। ১৬। ধরলা সেতুর উত্তর পাড়ে একটি আধুনিক বিনোদন পার্ক/থিমপার্ক নির্মাণ করা। ১৭। কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি চালু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ১৮। কুড়িগ্রাম-সোনাহাট স্থলবন্দর ট্রেন সার্ভিস চালু করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং লালমনিরহাট বিমানবন্দরে বানিজ্যিক ফ্লাইট চালু করার পদক্ষেপ নেয়া।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মেজর (অবঃ) মুহাম্মদ আব্দুস সালাম-এর কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাধারণ জনগণকে শুভেচ্ছা জানানোর রঙিন পোষ্টারে ছেয়ে গেছে তার নির্বাচনী এলাকা।
Posted ৪:৩৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।